মান্তা সম্প্রদায় বাংলাদেশের একটি জনগোষ্ঠি। এদের জীবন যাপন, আচার আচরণ সব কিছু চলছে একটি ভিন্ন সংস্কৃতিতে। এই সম্প্রদায়ের বাস নদীর পাড় কিংবা কোন পতিত জায়গা।

এক জায়গায় রান্না অপর জায়গায় খাওয়া এটাই তারা মেনে নিয়েছে। মান্থাদের সমাজ ব্যবস্থা মাতৃতান্ত্রিক। সংসারের যত কিছু রীতি আছে সব কিছু দেখবে নারীরা। বতমার্ন সময়ে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। সওদাগর শ্রেণী নাম দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো তৈরী হয়েছে।

মান্থা সমাজের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছেমাছ ধরা এবং সেগুলো বাজারে বিক্রি করা। এটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসার মূল কেন্দ্রস্থল।

বাল্য বিবাহের কারণে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। আধুনিকতা এসব নারীদের জীবনে পড়েনি। এখনও ভোর হলে মান্থা নারীরা পায়ে নুপুর কোমরে বিছা কপালে বড় টিপ মুখে খিলি পান এদের সাজের প্রধান উপকরণ। মান্থা নারী কুসুম বলে একটা সময় আমার মা গ্রামে গ্রামে ঘুরে,কাঁচের চুড়ি, আলতা, ফিতা, টিপ, কাজল, হরেকরকম জিনিস বিক্রি করতো। এখন আর তেমন বিক্রি হয় না। গ্রামের মানুষজনও মার্কেটে যায়।

আমাদের থেকে কিছু কিনতে চায় না। মা এখনও তার ব্যবসা ধরে রেখেছে। অনেকে অনেক কথা বলে কি করবো, আমাদের কেউ সহজে কাজে নিতে চায় না ঠিকানা নেই বলে আর সবচেয়ে বড় কথা হলো মাস্থা শোনলে আরও কাজ দিতে চায় না। মান্থা নারী একাধারে অশিক্ষিত, সমাজ থেকে বঞ্চিত, আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছুই জানেনা। বতমার্ন সময়ে এইচআইভি এইডস এর উপর অনেক গবেষনা হচ্ছে বিভিন্ন স্তরের সমাজের মানুষকে নিয়ে। মান্থা নারীদের নিয়ে তেমন কোন কাজ করা হয়নি। অথচ এসব নারীরা প্রতিটি সময় যৌন নিযার্তনের শিকার হচ্ছে।

তারা তাকিয়ে আছে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থার দিকে। অভিযোগ করে বলে মাঝে মাঝে এন জি ও আপারা আমাদের নাম লিখে নিয়ে যায় অনেক আশ্বাসের কথা বলে তারপর আর আসে না। আমাদের নির্দিষ্ট থাকার কোন জায়গা নেই যার কারণে আমাদের সন্তানেরা স্কুলে যেতে পারে না। বছরের বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থাকতে হয় যারফলে আমাদের সন্তানরা নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে ভর্তি হতে পারে না বা আমাদের সেই সামর্থ্য নেই তাদের লেখা পড়ার খরচ চালানোর। খোলা আকাশের নিচেই আমাদের জীবন।