বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে নদীনির্ভর জীবনে মান্থা সম্প্রদায়ের নারীরা প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
*শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন মান্থা নারীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। নদীতে বসবাসের কারণে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না, তাই ভাসমান স্কুল বা বিকল্প শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা জরুরি। পাশাপাশি নারীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ, যেমন মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তশিল্প, সেলাই ও ক্ষুদ্র ব্যবসার দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে পারে সরকার।
*স্বাস্থ্যসেবা এই নারীরা সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার আওতার বাইরে থাকেন। তাই সরকার ভ্রাম্যমাণ বোট ক্লিনিক চালু করতে পারে, যেখানে মাতৃস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, মাসিক স্বাস্থ্য ও শিশু পুষ্টি বিষয়ে সেবা প্রদান সম্ভব।
অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন মান্থা নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সরকার মাইক্রোক্রেডিট, সঞ্চয় কর্মসূচি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্প চালু করতে পারে। মাছ ধরা ও বাজারজাতকরণে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও বাজারে প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।
আবাসন ও স্যানিটেশন নদীভিত্তিক জীবনে তারা প্রায়ই ঝড়-বন্যার ঝুঁকিতে থাকেন। তাই টেকসই আবাসন, নিরাপদ টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা জরুরি।
সামাজিক স্বীকৃতি ও সুরক্ষা মান্থা নারীরা এখনও মূলধারার সমাজ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন। তাদের সামাজিক স্বীকৃতি দিতে হবে, স্থানীয় পর্যায়ে নারীদের সমবায় সংগঠন গঠন ও নারী নেতৃত্বের সুযোগ বাড়াতে হবে। এছাড়া বাল্যবিবাহ, সহিংসতা ও বৈষম্য প্রতিরোধে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহনশীলতা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মান্থা নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই তাদের জন্য দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ, বিকল্প জীবিকা কর্মসূচি ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে সরকার।
