লিজা আক্তার ময়না, একজন সাধারণ মৎস্যজীবী নারী। নদীর স্রোতের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিদিনের রুজি-রোজগার সংগ্রহ করেন। আর্থিক দৈন্যতা আর সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই তাঁর জীবনযাপন। তাঁর আট বছর বয়সী একটি প্রতিবন্ধী শিশুপুত্র রয়েছে, যার প্রয়োজন বিশেষ সেবা ও সহায়তা। কিন্তু সরকারি সুবিধাসমূহ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতার কারণে তিনি এতদিন পুত্রের জন্য কোনো সহায়তা পাননি।
*চ্যালেঞ্জ লিজা আপা এবং তাঁর পরিবারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল:
- সরকারি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা।
- প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তার অভাব।
- দীর্ঘ ও জটিল সরকারি প্রক্রিয়ার প্রতি ভীতি ও অনীহা।
*প্রকল্পের হস্তক্ষেপ: আমাদের প্রকল্প এর আওতায় লিজা আপাকে নেতৃত্ব ও নেটওয়ার্কিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এই প্রশিক্ষণে তিনি শেখেন:
- সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কী এবং সেগুলো কীভাবে পাওয়া যায়।
- বিশেষভাবে, প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কোথায় যোগাযোগ করতে হবে।
- স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগের কৌশল।
*লিজার সফলতা: প্রশিক্ষণ শেষে লিজা আপা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। তিনি শুধু জ্ঞানই অর্জন করেননি, বরং তা বাস্তবায়নের দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর স্বামী ও পুত্রকে নিয়ে তিনি স্থানীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরে যান। সেখানকার কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তিনি খুব সুন্দরভাবে তাঁর পুত্রের জন্য প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেন। পুরো প্রক্রিয়াটি তিনি অত্যন্ত ধৈর্য ও দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করেন।
*প্রত্যাশিত ফলাফল: লিজা আপার এই সফল আবেদনের মাধ্যমে তাঁর পুত্র ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছে। এই কার্ড পাওয়ার মাধ্যমে শিশুটি পাবে:
- সরকারি মাসিক ভাতা
- বিনামূল্যে বা অল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা
- শিক্ষা ও পুনর্বাসন সুবিধা
- অন্যান্য কল্যাণমূলক সরকারি সহায়তা
*অর্জিত শিক্ষা: লিজা আপার এই সাফল্য আমাদের প্রকল্পের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি প্রমাণ করে যে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে প্রান্তিক নারীরাও নিজেদের এবং পরিবারের অধিকার আদায়ে সক্ষম। তাঁর এই সাফল্য অন্যান্য মৎস্যজীবী নারীদেরও উদ্বুদ্ধ করবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে এগিয়ে আসতে।
*সুপারিশ: লিজা আপার মতো আরও নারী যাতে এই ধরনের সুবিধা পেতে পারে, সে জন্য আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে এমন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় সরকারি offices-এর সাথে stronger linkage তৈরি করতে হবে যাতে নারীরা বাধাহীনভাবে সেবা পেতে পারে।